Dhaka 8:42 am, Tuesday, 22 April 2025
সর্বশেষঃ
চাঁপাইনবাবগঞ্জে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় নারীসহ ২ জন নিহত নরসিংদী পৌরসভায় সন্ত্রাসী হামলা, নারীসহ পাঁচজন আহত, স্বর্ণা লঙ্কার লুট ঘর থেকে নামিয়ে দিলে মোরা থাকবো কই এ ভাবেই কান্নায় ভেঙে পড়ে গুচ্ছগ্রামের ৪ টি পরিবার ময়মনসিংহে ক্ষুদে ফুটবলারদের প্রশিক্ষণের শুভ উদ্বোধন ঝালকাঠিতে পল্লী বিদ্যুৎ এর বিলসহ নানা অনিয়মের বিরুদ্ধে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা নওগাঁর রাণীনগরে উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক গ্রেফতার নওগাঁর রাণীনগরে চার মাদকসেবীর ৬ মাসের কারাদণ্ড নাগরপুরে রাস্তার কাজ না করেই ৬ কোটি ৬০ লাখ টাকা আত্মসাৎ এর অভিযোগ তদন্তে দুদক নাগরপুরে মাটি খেকোদের দৌরাত্ম কমাতে অভিযান ইউএনও নোমান পত্নীতলায় বিএনপি’র নব নির্বাচত কমিটিকে সংবর্ধনা প্রদান

নাগরপুরে রাস্তার কাজ না করেই ৬ কোটি ৬০ লাখ টাকা আত্মসাৎ এর অভিযোগ তদন্তে দুদক

  • Reporter Name
  • Update Time : 01:48:05 am, Tuesday, 22 April 2025
  • 10 Time View

নাগরপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধিঃ টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলায় রাস্তার কাজ না করে এলজিইডি’র যোগসাজশে টাকা আত্মসাৎ করার  অভিযোগের ভিত্তিতে সরেজমিনে তদন্তে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

Mymensingh Region Rural Infrastructure Development Project (MRRIDP) প্রকল্পের  সংশ্লিষ্ট এলজিইডি’র কর্মকর্তাদের সাথে যোগসাজশে ঠিকাদার কাজ না করেই চূড়ান্ত বিল উত্তোলন করে টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে দুর্নীতি দমন কমিশন তদন্তে মাঠে নেমেছে।

নাগরপুর উপজেলার গয়হাটা ও দপ্তিয়র ইউনিয়নের ২টি কাজ শেষ না করেই ৬ কোটি ৬০ লাখ টাকা নিয়ে উধাও ঠিকাদার ও ইঞ্জিনিয়ার। বিষয়টি নিয়ে সরেজমিনে ২০ মার্চ সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত তদন্ত করেছে দুদক। এসময় রাস্তা গুলোর বিভিন্ন জায়গায় খনন করে কাজে ব্যবহৃত মালামাল পর্যবেক্ষণ ও পরিমাপ করে দুদক। এছাড়াও এলাকাবাসীর সাথে উল্লেখিত বিষয়গুলো খতিয়ে দেখেন তারা। কাজগুলোর কিভাবে করার জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়েছিল ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এগুলোও পর্যালোচনা করেন।

ঠিকাদারি কাজের নামে পুরো বিল উত্তোলন করে লাপাত্তা হয়েছে ঠিকাদার ও ইঞ্জিনিয়ার। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, অর্থ আত্মসাৎ এর জড়িত প্রকৌশলী এখন পড়াশোনার নামে বিদেশ পাড়ি জমিয়েছে।
টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলায় এম আর আর আই ডি পি প্রকল্পের আওতায় দপ্তিয়ার ইউনিয়ন পরিষদ থেকে তেবাড়িয়া রাস্তার ১৬০০ মিটার বিটুমিন/ পিচ ঢালাই (বিসি) এবং ৩ টি বক্স কালভার্ট নির্মানের জন্য ২০১৯ সালের আগষ্ট মাসে কাজ শুরু করে ১ বছরে শেষ করার জন্য ২ কোটি ২০ লাখ টাকা নির্ধারন করে এলজিইডি এর সাথে চুক্তিবদ্ধ হয় টাঙ্গাইলের পাড়দিঘুলিয়ার ফ্রেন্ডস কনস্ট্রাকশন নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
অর্ধ যুগ আগে শুরু করলেও এখনো তা শেষ হয়নি। কয়েক দফা এসে নামমাত্র কিছু নিম্নমানের খোয়া ফেলে সেই যে চলে গেছে ঠিকাদার আর আসেনি কাজটি সমাপ্ত করতে।

আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য ও শিল্প ও বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু’র নিজ ইউনিয়ন ও মামার বাড়ি, গয়হাটা ইউনিয়নে একই প্রকল্পের আওতায় ৩.৬২ কিলোমিটার রাস্তার কাজ অসমাপ্ত রেখেই উধাও ঠিকাদার।
গয়হাটা থেকে ভারড়া রাস্তায় পিচ ঢালাই (বিসি) করার জন্য ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারী মাসে শুরু করে ১ বছরে শেষ করার জন্য ৪ কোটি ৪০ লাখ টাকায় করে এলজিডির সাথে চুক্তিবদ্ধ হয় সৈয়দ মুজিবুর রহমান এন্ড অবনী এন্টারপ্রাইজ নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ৫ আগষ্টের পর থেকে পলাতক আছে এ প্রতিষ্ঠানের ঠিকাদার হেকমত।
গয়হাটা-ভারড়া রাস্তার  পিচ ঢালাই এবং ৩টি বক্স কালভার্ট নির্মানের কথা ছিলো কিন্তু তা বাস্তবতার  দেখা পায়নি আজও।

উল্লেখ্য, এই কাজ দুটোর বিলগুলো ২০২৩ এর জুন মাসে দিয়ে দেয়া হয়েছে।
দপ্তিয়রের রাস্তার চুড়ান্ত বিল ও পারফরম্যান্স সিকিউরিটিও ফেরত দেয়া হয়েছে। হাসিনা পালানোর অনেক আগেই।
গয়হাটা ইউনিয়নের আরেকটি রাস্তায় ১৩০০ মিটার কাজ করার থাকলেও সরেজমিনে অস্তিত্ব পাওয়া যায় প্রায় ১১০০ মিটার মাত্র।

দুদকের অনুসন্ধানে, এসব কাজে আইএসজি ঠিক থাকলেও সাব-বেইস ও ডব্লিউএমবি এর কাজে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার ও থিকনেস কম পাওয়া গেছে বলে অভিযোগ প্রমানিত হয়।

নাগরপুর উপজেলা এলজিইডি’র প্রকৌশলী তোরাব আলী বলেন, আমি তো নতুন আসছি। আমি এসব জানি না। তবে আমার ঊর্ধ্বতনের সাথে কথা বলে, আমি দ্রুত এ কাজগুলো করার ব্যবস্থা করব।

রাস্তা ২টি ঘুরে দেখে এলাকাবাসী ও সড়ক ব্যবহারকারীদের সাথে কথা বলে বিভিন্ন জায়গায় গর্তকরে কাজে ব্যবহৃত মালামাল বের করে তা পরিমাপ করে টাঙ্গাইল জেলা দুদকের সহকারী পরিচালক মো. নূর আলাম বলেন,

Mymensingh Region Rural Infrastructure Development Project (MRRIDP) সংশ্লিষ্ট এলজিইডি’র কর্মকর্তাদের সাথে যোগসাজশে ঠিকাদার কর্তৃক টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলায় প্রকল্পের কাজ না করেই বিল উত্তোলনপূর্বক আত্মসাৎ করার অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে দুর্নীতি দমন কমিশন, জেলা কার্যালয়, টাঙ্গাইল হতে একটি এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালিত হয়।  অভিযানকালে নিরপেক্ষ প্রকৌশলীর উপস্থিতিতে অভিযোগ সংশ্লিষ্ট রাস্তা দুটি সরেজমিনে পরিদর্শনপূর্বক পরিমাপ গ্রহণ করা হয় এবং সংশ্লিষ্ট রেকর্ডপত্র সংগ্রহ করা হয়। প্রাথমিক পর্যালোচনায় একটি প্রকল্পের কাজ আংশিক বাস্তবায়ন করে সমূদয় কাজের চুড়ান্ত বিল উত্তোলনপূর্বক আত্মসাতের প্রথমিক প্রমাণ পাওয়া যায়। এছাড়া, বাস্তবায়িত আংশিক কাজে নিচের বালুর স্তর ঠিক পাওয়া গেলেও খোয়া-বালু (সাব-বেইস) ও খোয়া (ডব্লিউবিএম) -এর থিকনেস অনেক কম এবং নিম্নমানের খোয়া পাওয়া যায়। অপর প্রকল্পে, আংশিক কাজ করে বিধিবহির্ভূতভাবে অতিরিক্ত বিল প্রদান করার প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়া গেছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Shahin Shahin

আরও দেখুন

চাঁপাইনবাবগঞ্জে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় নারীসহ ২ জন নিহত

নাগরপুরে রাস্তার কাজ না করেই ৬ কোটি ৬০ লাখ টাকা আত্মসাৎ এর অভিযোগ তদন্তে দুদক

Update Time : 01:48:05 am, Tuesday, 22 April 2025

নাগরপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধিঃ টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলায় রাস্তার কাজ না করে এলজিইডি’র যোগসাজশে টাকা আত্মসাৎ করার  অভিযোগের ভিত্তিতে সরেজমিনে তদন্তে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

Mymensingh Region Rural Infrastructure Development Project (MRRIDP) প্রকল্পের  সংশ্লিষ্ট এলজিইডি’র কর্মকর্তাদের সাথে যোগসাজশে ঠিকাদার কাজ না করেই চূড়ান্ত বিল উত্তোলন করে টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে দুর্নীতি দমন কমিশন তদন্তে মাঠে নেমেছে।

নাগরপুর উপজেলার গয়হাটা ও দপ্তিয়র ইউনিয়নের ২টি কাজ শেষ না করেই ৬ কোটি ৬০ লাখ টাকা নিয়ে উধাও ঠিকাদার ও ইঞ্জিনিয়ার। বিষয়টি নিয়ে সরেজমিনে ২০ মার্চ সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত তদন্ত করেছে দুদক। এসময় রাস্তা গুলোর বিভিন্ন জায়গায় খনন করে কাজে ব্যবহৃত মালামাল পর্যবেক্ষণ ও পরিমাপ করে দুদক। এছাড়াও এলাকাবাসীর সাথে উল্লেখিত বিষয়গুলো খতিয়ে দেখেন তারা। কাজগুলোর কিভাবে করার জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়েছিল ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এগুলোও পর্যালোচনা করেন।

ঠিকাদারি কাজের নামে পুরো বিল উত্তোলন করে লাপাত্তা হয়েছে ঠিকাদার ও ইঞ্জিনিয়ার। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, অর্থ আত্মসাৎ এর জড়িত প্রকৌশলী এখন পড়াশোনার নামে বিদেশ পাড়ি জমিয়েছে।
টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলায় এম আর আর আই ডি পি প্রকল্পের আওতায় দপ্তিয়ার ইউনিয়ন পরিষদ থেকে তেবাড়িয়া রাস্তার ১৬০০ মিটার বিটুমিন/ পিচ ঢালাই (বিসি) এবং ৩ টি বক্স কালভার্ট নির্মানের জন্য ২০১৯ সালের আগষ্ট মাসে কাজ শুরু করে ১ বছরে শেষ করার জন্য ২ কোটি ২০ লাখ টাকা নির্ধারন করে এলজিইডি এর সাথে চুক্তিবদ্ধ হয় টাঙ্গাইলের পাড়দিঘুলিয়ার ফ্রেন্ডস কনস্ট্রাকশন নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
অর্ধ যুগ আগে শুরু করলেও এখনো তা শেষ হয়নি। কয়েক দফা এসে নামমাত্র কিছু নিম্নমানের খোয়া ফেলে সেই যে চলে গেছে ঠিকাদার আর আসেনি কাজটি সমাপ্ত করতে।

আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য ও শিল্প ও বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু’র নিজ ইউনিয়ন ও মামার বাড়ি, গয়হাটা ইউনিয়নে একই প্রকল্পের আওতায় ৩.৬২ কিলোমিটার রাস্তার কাজ অসমাপ্ত রেখেই উধাও ঠিকাদার।
গয়হাটা থেকে ভারড়া রাস্তায় পিচ ঢালাই (বিসি) করার জন্য ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারী মাসে শুরু করে ১ বছরে শেষ করার জন্য ৪ কোটি ৪০ লাখ টাকায় করে এলজিডির সাথে চুক্তিবদ্ধ হয় সৈয়দ মুজিবুর রহমান এন্ড অবনী এন্টারপ্রাইজ নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ৫ আগষ্টের পর থেকে পলাতক আছে এ প্রতিষ্ঠানের ঠিকাদার হেকমত।
গয়হাটা-ভারড়া রাস্তার  পিচ ঢালাই এবং ৩টি বক্স কালভার্ট নির্মানের কথা ছিলো কিন্তু তা বাস্তবতার  দেখা পায়নি আজও।

উল্লেখ্য, এই কাজ দুটোর বিলগুলো ২০২৩ এর জুন মাসে দিয়ে দেয়া হয়েছে।
দপ্তিয়রের রাস্তার চুড়ান্ত বিল ও পারফরম্যান্স সিকিউরিটিও ফেরত দেয়া হয়েছে। হাসিনা পালানোর অনেক আগেই।
গয়হাটা ইউনিয়নের আরেকটি রাস্তায় ১৩০০ মিটার কাজ করার থাকলেও সরেজমিনে অস্তিত্ব পাওয়া যায় প্রায় ১১০০ মিটার মাত্র।

দুদকের অনুসন্ধানে, এসব কাজে আইএসজি ঠিক থাকলেও সাব-বেইস ও ডব্লিউএমবি এর কাজে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার ও থিকনেস কম পাওয়া গেছে বলে অভিযোগ প্রমানিত হয়।

নাগরপুর উপজেলা এলজিইডি’র প্রকৌশলী তোরাব আলী বলেন, আমি তো নতুন আসছি। আমি এসব জানি না। তবে আমার ঊর্ধ্বতনের সাথে কথা বলে, আমি দ্রুত এ কাজগুলো করার ব্যবস্থা করব।

রাস্তা ২টি ঘুরে দেখে এলাকাবাসী ও সড়ক ব্যবহারকারীদের সাথে কথা বলে বিভিন্ন জায়গায় গর্তকরে কাজে ব্যবহৃত মালামাল বের করে তা পরিমাপ করে টাঙ্গাইল জেলা দুদকের সহকারী পরিচালক মো. নূর আলাম বলেন,

Mymensingh Region Rural Infrastructure Development Project (MRRIDP) সংশ্লিষ্ট এলজিইডি’র কর্মকর্তাদের সাথে যোগসাজশে ঠিকাদার কর্তৃক টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলায় প্রকল্পের কাজ না করেই বিল উত্তোলনপূর্বক আত্মসাৎ করার অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে দুর্নীতি দমন কমিশন, জেলা কার্যালয়, টাঙ্গাইল হতে একটি এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালিত হয়।  অভিযানকালে নিরপেক্ষ প্রকৌশলীর উপস্থিতিতে অভিযোগ সংশ্লিষ্ট রাস্তা দুটি সরেজমিনে পরিদর্শনপূর্বক পরিমাপ গ্রহণ করা হয় এবং সংশ্লিষ্ট রেকর্ডপত্র সংগ্রহ করা হয়। প্রাথমিক পর্যালোচনায় একটি প্রকল্পের কাজ আংশিক বাস্তবায়ন করে সমূদয় কাজের চুড়ান্ত বিল উত্তোলনপূর্বক আত্মসাতের প্রথমিক প্রমাণ পাওয়া যায়। এছাড়া, বাস্তবায়িত আংশিক কাজে নিচের বালুর স্তর ঠিক পাওয়া গেলেও খোয়া-বালু (সাব-বেইস) ও খোয়া (ডব্লিউবিএম) -এর থিকনেস অনেক কম এবং নিম্নমানের খোয়া পাওয়া যায়। অপর প্রকল্পে, আংশিক কাজ করে বিধিবহির্ভূতভাবে অতিরিক্ত বিল প্রদান করার প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়া গেছে।