Dhaka 5:08 am, Thursday, 15 May 2025
সর্বশেষঃ
ময়মনসিংহ নাসিরাবাদ কলেজের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত। নরসিংদীর রায়পুরায় ঈদের ছুটিতে বেড়াতে এসে চাঁদাবাজদের হয়রানির শিকার। চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভায় জিআইএস ডেটা হস্তান্তর ও আইএমআইএস ওরিয়েন্টেশন অনুষ্ঠিত। টেকনাফ হ্নীলায় প্রেমের বিয়ের ৩মাস না যেতেই গৃহবধু শ্বাশুড় বাড়িতে খুন। নওগাঁর রাণীনগরে ভ্রাম্যমাণ আদালতে তিন মাদকসেবির কারাদণ্ড নওগাঁর রাণীনগরে অভ্যন্তরীণ বোরো ধান-চাল সংগ্রহের উদ্বোধন ধোবাউড়ায় বিভিন্ন অফিস ও প্রকল্প পরিদর্শনে জেলা প্রশাসক মফিদুল আলম ফুলপুরে ইউপি মেম্বার সফরে’র মুক্তির দাবীতে মানববন্ধন কক্সবাজার টেকনাফে মানবপাচারকারীর আস্তানা থেকে ১৪ বাংলাদেশি উদ্ধার ময়মনসিংহ ডিবি পুলিশের অভিযানে ২ কেজি গাঁজা ও ১২ টি কাঁচের বিদেশী মদের বোতল সহ গ্রেফতার-০২

টেকনাফ হ্নীলায় প্রেমের বিয়ের ৩মাস না যেতেই গৃহবধু শ্বাশুড় বাড়িতে খুন।

জামাল উদ্দীন, কক্সবাজার জেলা প্রতিনিধিঃ-

কক্সবাজার টেকনাফের হ্নীলায় পরিবারের অবাধ্য হয়ে ভালবেসে বিয়ে করলেও ৩ মাস না যেতেই সংসারের সুখ সইল না নববধু হিরার কপালে। বেকার এবং মাদকাসক্ত স্বামীর শারীরিক ও মানসিক টর্চারে
বিদ্যুৎ শট দিয়ে মারা হল হিরা মনি কে। মৃত্যুর গোসল করাতে গিয়ে শনাক্ত হল কি দিয়ে হত্যা করা হল । পিটে, হাতে, গায়ে, পায়ে বিদ্যুৎ শটের দাগ আর দাগ!

গৃহবধুকে খুনের অভিযোগ উঠেছে। জানাজা শেষে নিহত গৃহবধুকে দাফন করা হলেও অভিযুক্ত পলাতক স্বামীকে দ্রুত গ্রেফতারের দাবী উঠেছে।

সুত্র জানায়,১৪মে রাতের প্রথম প্রহরে টেকনাফের হ্নীলা মৌলভী বাজারের রোজার ঘোনার হাজী নুর আহমদের বাড়িতে পুত্র আব্বাস উদ্দিনের নববিবাহিত স্ত্রী লুলুয়ার মরজান হিরামনি (১৮) এর গলায় মাথার কাপড়ে প্যাঁচানো মৃতদেহ দেখতে পেয়ে ভোর রাত ২টারদিকে লোক মারফতে হিরামনির হ্নীলা পূর্ব সিকদার পাড়ার পরিবারে খবর দেয়। খবর পেয়ে ভাই-বোনসহ অন্যান্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে হিরার নিথর মৃতদেহ দেখতে পায়। বিষয়টি টেকনাফ থানা পুলিশকে অবহিত করলে সকালে থানা পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে সুরতহাল রিপোর্ট তৈরীর পর মৃতদেহ পোস্টমর্টেমের জন্য উদ্ধার করে নিয়ে যায়। তবে এসময় স্ত্রীর সন্দেহভাজন ঘাতক স্বামীর ব্যবহৃত মোবাইল বন্ধ ও সে পলাতক রয়েছে। পোস্টমর্টেম শেষে মৃতদেহ বিকালে বাড়িতে আনা হয়। বাদে মাগরিব হ্নীলা শাহ মজিদিয়া আলিম মাদ্রাসা মাঠে নামাজে জানাজা শেষে স্থানীয় কবর স্থানে দাফন করা হয়েছে। শ্বাশুড় বাড়িতে নববধু খুনের ঘটনায় উভয় পরিবার ও এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে হ্নীলা মৌলভী বাজার রোজারঘোনার হাজী নুর আহমদের কলেজ পড়ুয়া আব্বাস উদ্দিন এবং হ্নীলা পূর্ব সিকদার পাড়ার সাবেক শিক্ষক মীর কাশেমের মাদ্রাসায় পড়ুয়া মেয়ে লুলুয়ার মরজান হিরামনি (১৮) এর মধ্যে প্রেমের সম্পর্কের জেরধরে দুজনই পালিয়ে চলতি বছরের ২১শে জানুয়ারী বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। বিয়ের ৩মাস না যেতেই বেকারত্বে কারণে তাদের সংসারে পারিবারিক কলহের সৃষ্টি হয়। এরই মধ্যে স্বামী নববধুকে বাড়িতে একা রেখে গভীর রাতে বাড়িতে ফিরে। মাঝে-মধ্যে খারাপ বন্ধুদের পাল্লায় পড়ে মাদক সেবন করে। তা নিয়ে গৃহবধু হিরা বলত আমি সব ছেড়ে তোমার কাছে পালিয়ে এসেছি এই কর্মকান্ডের জন্য নাকি প্রশ্ন করলে দুজনার মধ্যে কথা কাটাকাটি ও পারিবারিক কলহের সৃষ্টি হয়ে আসছে।

এই বিষয়ে হিরার ভাই হোসনে মোবারক জানান,হিরা আমাদের না জানিয়ে আব্বাসকে বিয়ে করার ঘটনায় ক্ষুদ্ধ হলেও নিয়মিত ছোট বোনের খবর রাখতাম। তার স্বামীর বেকারত্ব নিয়ে তাদের মধ্যে কলহের ঘটনাটি জানতে পেরে আমরা পারিবারিক সিদ্ধান্তে আসন্ন কোরবানের পরে একটি ফার্মেসী করে দিয়ে স্বাবলম্বী করার সিদ্ধান্ত নিই। এরই মধ্যে আমার বোনের মৃত্যুর সংবাদ শুনে মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়ল। ঘটনাস্থলে গিয়ে শুনি ফাঁস লাগিয়ে আমার বোন আত্নহত্যা করেছে। গলায় মাথা কাপড় প্যাঁচানো থাকলেও গলায় একটু দাগ ছাড়া শরীরের কোথাও দাগ নেই। কিন্তু মৃতদেহকে গোসল দেওয়ার সময় বাম পায়ের হাঁটুর নিচে কারেন্টের শর্ট দেওয়ার মত কালো দাগ আর বেøডের বা ছুরি দিয়ে হালকা করে কাটার ২টি চিহ্ন রয়েছে। আমাদের মনে হয়েছে বেকার ও মাদকাসক্ত স্বামী নিজেই খুন করে এই নাটক সাজিয়েছে। এই বিষয়ে মৃতদেহ দাফনের পর টেকনাফ থানায় মডেল থানায় হত্যা মামলার একটি লিখিত এজাহার দাখিল করার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।

বাড়ির মালিক ও নিহত গৃহবধুর শ্বাশুড় অসুস্থ হাজী নুর আহমদ বলেন,কিভাবে এই ধরনের ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটল আমরা এখনো বুঝতে পারছিনা।

নিহত হিরার ভাসুর জমির উদ্দিন বলেন,আমি মৌলভী বাজার ষ্টেশনে দোকান করি। গতকাল বিকালে কক্সবাজার মালামাল কিনতে আসি। গভীর রাতে বাড়ি থেকে হঠাৎ ফোন করে বলে ছোট ভাই আব্বাসের বউ গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্নহত্যা করেছে বলে জানায়। কি কারণে এই ধরনের ন্যাক্কারজনক ঘটনা বুঝে উঠতে পারছিনা। তবে ছোট ভাই আব্বাসের ব্যবহৃত মুঠোফোন বন্ধ এবং সে গা ঢাকা দেওয়ায় এই মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানতে পারিনি।

এই বিষয়ে টেকনাফ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন সংবাদকর্মীদের জানান,আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে মৃতদেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠিয়েছি। এই বিষয়ে লিখিত এজাহার হাতে এলে তদন্ত স্বাপেক্ষে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

সাধারণ মানুষ ঘাতক পাষান্ড স্বামীকে দ্রুত গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার জন্য প্রশাসনের প্রতি জোর দাবী জানিয়েছেন

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

sadhin bangladesh

আরও দেখুন

ময়মনসিংহ নাসিরাবাদ কলেজের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত।

টেকনাফ হ্নীলায় প্রেমের বিয়ের ৩মাস না যেতেই গৃহবধু শ্বাশুড় বাড়িতে খুন।

Update Time : 11:11:34 pm, Wednesday, 14 May 2025

জামাল উদ্দীন, কক্সবাজার জেলা প্রতিনিধিঃ-

কক্সবাজার টেকনাফের হ্নীলায় পরিবারের অবাধ্য হয়ে ভালবেসে বিয়ে করলেও ৩ মাস না যেতেই সংসারের সুখ সইল না নববধু হিরার কপালে। বেকার এবং মাদকাসক্ত স্বামীর শারীরিক ও মানসিক টর্চারে
বিদ্যুৎ শট দিয়ে মারা হল হিরা মনি কে। মৃত্যুর গোসল করাতে গিয়ে শনাক্ত হল কি দিয়ে হত্যা করা হল । পিটে, হাতে, গায়ে, পায়ে বিদ্যুৎ শটের দাগ আর দাগ!

গৃহবধুকে খুনের অভিযোগ উঠেছে। জানাজা শেষে নিহত গৃহবধুকে দাফন করা হলেও অভিযুক্ত পলাতক স্বামীকে দ্রুত গ্রেফতারের দাবী উঠেছে।

সুত্র জানায়,১৪মে রাতের প্রথম প্রহরে টেকনাফের হ্নীলা মৌলভী বাজারের রোজার ঘোনার হাজী নুর আহমদের বাড়িতে পুত্র আব্বাস উদ্দিনের নববিবাহিত স্ত্রী লুলুয়ার মরজান হিরামনি (১৮) এর গলায় মাথার কাপড়ে প্যাঁচানো মৃতদেহ দেখতে পেয়ে ভোর রাত ২টারদিকে লোক মারফতে হিরামনির হ্নীলা পূর্ব সিকদার পাড়ার পরিবারে খবর দেয়। খবর পেয়ে ভাই-বোনসহ অন্যান্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে হিরার নিথর মৃতদেহ দেখতে পায়। বিষয়টি টেকনাফ থানা পুলিশকে অবহিত করলে সকালে থানা পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে সুরতহাল রিপোর্ট তৈরীর পর মৃতদেহ পোস্টমর্টেমের জন্য উদ্ধার করে নিয়ে যায়। তবে এসময় স্ত্রীর সন্দেহভাজন ঘাতক স্বামীর ব্যবহৃত মোবাইল বন্ধ ও সে পলাতক রয়েছে। পোস্টমর্টেম শেষে মৃতদেহ বিকালে বাড়িতে আনা হয়। বাদে মাগরিব হ্নীলা শাহ মজিদিয়া আলিম মাদ্রাসা মাঠে নামাজে জানাজা শেষে স্থানীয় কবর স্থানে দাফন করা হয়েছে। শ্বাশুড় বাড়িতে নববধু খুনের ঘটনায় উভয় পরিবার ও এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে হ্নীলা মৌলভী বাজার রোজারঘোনার হাজী নুর আহমদের কলেজ পড়ুয়া আব্বাস উদ্দিন এবং হ্নীলা পূর্ব সিকদার পাড়ার সাবেক শিক্ষক মীর কাশেমের মাদ্রাসায় পড়ুয়া মেয়ে লুলুয়ার মরজান হিরামনি (১৮) এর মধ্যে প্রেমের সম্পর্কের জেরধরে দুজনই পালিয়ে চলতি বছরের ২১শে জানুয়ারী বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। বিয়ের ৩মাস না যেতেই বেকারত্বে কারণে তাদের সংসারে পারিবারিক কলহের সৃষ্টি হয়। এরই মধ্যে স্বামী নববধুকে বাড়িতে একা রেখে গভীর রাতে বাড়িতে ফিরে। মাঝে-মধ্যে খারাপ বন্ধুদের পাল্লায় পড়ে মাদক সেবন করে। তা নিয়ে গৃহবধু হিরা বলত আমি সব ছেড়ে তোমার কাছে পালিয়ে এসেছি এই কর্মকান্ডের জন্য নাকি প্রশ্ন করলে দুজনার মধ্যে কথা কাটাকাটি ও পারিবারিক কলহের সৃষ্টি হয়ে আসছে।

এই বিষয়ে হিরার ভাই হোসনে মোবারক জানান,হিরা আমাদের না জানিয়ে আব্বাসকে বিয়ে করার ঘটনায় ক্ষুদ্ধ হলেও নিয়মিত ছোট বোনের খবর রাখতাম। তার স্বামীর বেকারত্ব নিয়ে তাদের মধ্যে কলহের ঘটনাটি জানতে পেরে আমরা পারিবারিক সিদ্ধান্তে আসন্ন কোরবানের পরে একটি ফার্মেসী করে দিয়ে স্বাবলম্বী করার সিদ্ধান্ত নিই। এরই মধ্যে আমার বোনের মৃত্যুর সংবাদ শুনে মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়ল। ঘটনাস্থলে গিয়ে শুনি ফাঁস লাগিয়ে আমার বোন আত্নহত্যা করেছে। গলায় মাথা কাপড় প্যাঁচানো থাকলেও গলায় একটু দাগ ছাড়া শরীরের কোথাও দাগ নেই। কিন্তু মৃতদেহকে গোসল দেওয়ার সময় বাম পায়ের হাঁটুর নিচে কারেন্টের শর্ট দেওয়ার মত কালো দাগ আর বেøডের বা ছুরি দিয়ে হালকা করে কাটার ২টি চিহ্ন রয়েছে। আমাদের মনে হয়েছে বেকার ও মাদকাসক্ত স্বামী নিজেই খুন করে এই নাটক সাজিয়েছে। এই বিষয়ে মৃতদেহ দাফনের পর টেকনাফ থানায় মডেল থানায় হত্যা মামলার একটি লিখিত এজাহার দাখিল করার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।

বাড়ির মালিক ও নিহত গৃহবধুর শ্বাশুড় অসুস্থ হাজী নুর আহমদ বলেন,কিভাবে এই ধরনের ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটল আমরা এখনো বুঝতে পারছিনা।

নিহত হিরার ভাসুর জমির উদ্দিন বলেন,আমি মৌলভী বাজার ষ্টেশনে দোকান করি। গতকাল বিকালে কক্সবাজার মালামাল কিনতে আসি। গভীর রাতে বাড়ি থেকে হঠাৎ ফোন করে বলে ছোট ভাই আব্বাসের বউ গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্নহত্যা করেছে বলে জানায়। কি কারণে এই ধরনের ন্যাক্কারজনক ঘটনা বুঝে উঠতে পারছিনা। তবে ছোট ভাই আব্বাসের ব্যবহৃত মুঠোফোন বন্ধ এবং সে গা ঢাকা দেওয়ায় এই মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানতে পারিনি।

এই বিষয়ে টেকনাফ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন সংবাদকর্মীদের জানান,আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে মৃতদেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠিয়েছি। এই বিষয়ে লিখিত এজাহার হাতে এলে তদন্ত স্বাপেক্ষে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

সাধারণ মানুষ ঘাতক পাষান্ড স্বামীকে দ্রুত গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার জন্য প্রশাসনের প্রতি জোর দাবী জানিয়েছেন