জেওয়ান আলী বিরামপুর (দিনাজপুর)প্রতিনিধি
দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলার খানপুর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সরকারি স্লিপ ও ক্ষুদ্র মেরামতের ২ লাখ ৩৫ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। কিন্তু কাজ না করে ভুয়া ভাউচার দেখিয়ে টাকা উত্তোলনের অভিযোগ উঠেছে বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস থেকে তদন্ত করে মিলেছে অনিয়মের প্রমাণ। প্রধান শিক্ষককে দেওয়া হয়েছে শোকজের চিঠি। তবুও এই সব অভিযোগ অস্বীকার করছেন প্রধান শিক্ষক। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়,বিরামপুর উপজেলা থেকে তিন কিলোমিটার দূরে খানপুর ইউনিয়ন। এই ইউনিয়নে ১৯২৯ সালে স্থাপিত করা হয় খানপুর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি। গ্রাম অঞ্চলে হলেও শিক্ষার মান অনেকটাই ভাল। বিদ্যালয়ের রুমসহ বিভিন্ন মেরামতের জন্য স্লিপ ও ক্ষুদ্র বরাদ্দের আওতাই ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে দেওয়া হয় ২ লাখ ৩৫ হাজার টাকা। প্রধান শিক্ষক ক্ষুদ্র মেরামতের প্রাক্কলনে উল্লেখিত ফ্যানের মূল্যের চেয়ে কম দামে নিম্নমানের ফ্যান ক্রয় করেন এমনকি এই সব নিম্ন মানের ফ্যানের দামও দেখানো হয় দ্বিগুণ। এছাড়া বিদ্যালয়ের রুমগুলোতে রং করার কথা থাকলেও তিনি দুইটি রুমে নিম্ন মানের রং করেন। স্লিপে প্লানে ২টি ব্যানার ক্রয় বাবদ ১৫০০ টাকা বাজেট থাকলেও তিনি ৬০০ টাকা দিয়ে ব্যানার ক্রয় করেন। এমনকি রাতের আধারে রং এর কাজ করা এবং প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী দিয়ে ড্রেন পরিষ্কার করার অভিযোগও ওঠে তার বিরুদ্ধে। এসব সামান্য কিছু টাকার কাজ করে ভুয়া ভাউচার দেখিয়ে টাকা উত্তোলন করে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মুশতাক আহমেদ। পরে বিষয়টি স্থানীয়দের নজরে আসলে তারা জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার বরাবর অভিযোগ করেন। বিদ্যালয়ে কাজের অনিয়মে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে ছামসুজ্জামান জামাল ও মোস্তাফিজুর রহমান ফিজু নামে দুই অভিযোগকারী বলেন,প্রথমে কাজের বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক এলাকাবাসীর সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন। পরে তারা জেলা প্রশাসক,উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার বরাবর অভিযোগ করেন। অভিযোগ দেওয়ার পর দুই সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করেন প্রশাসন। অভিযোগ দেওয়ার পর প্রধান শিক্ষক কাজ শুরু করেন। তবে সেই কাজও রাতের আধারে করে এবং নিম্নমানের কাজ করে। এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে আমরা এই প্রধান শিক্ষকের শাস্তি দাবি করছি। খানপুর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কয়েকজন সহকারী শিক্ষক বলেন,চলতি বছরের এপ্রিল মাসে তিনি এই বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। যোগদানের পর থেকেই তিনি সহকর্মীদের সঙ্গে খারাপ আচরণ শুরু করেন। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অন্য শিক্ষকদের পরামর্শ নিয়েও নিজের খেয়ালখুশি মত সব কাজ করেছে বলে অভিযোগ বিদ্যালয়ের অন্য শিক্ষকদের। তবে এইটা সত্য যে প্রধান শিক্ষক প্রথমে দুইটি রুমে সামান্য কাজ করে। পরে আমরা এ বিষয়ে জানতে চাইলে আমাদের বলে যে টাকা শেষ, পরে বাজেট আসলে আবার কাজ করা হবে। সত্য ঘটনা বলার কারণে অন্য শিক্ষকদের বিরুদ্ধে চাঁদা চাওয়ার অভিযোগও তোলেন এই প্রধান শিক্ষক। খানপুর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোশতাক আহমেদ বলেন, নিয়ম অনুযায়ী সকল কাজ করেছেন তিনি। কোন অনিয়ম করেননি। সহকর্মীদের সাথে সর্বদাই সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক রেখে কাজ করেছেন। তার বিরুদ্ধে আনা সকল অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবী করেন এই প্রধান শিক্ষক। এদিকে বিরামপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার ও তদন্ত কমিটির সদস্য জনার্দন চন্দ্র দেবর্শমা বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর আমিসহ আমার উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আল সিরাজ অত্র বিদ্যালয়ের কাজ তদন্ত করেছি। প্রাথমিক অবস্থায় কাজের বিষয়ে অনিয়ম পাওয়া গেছে। ক্ষুদ্র মেরামতের ২ লাখ টাকার কাজের প্রাক্কলন অনুযায়ী শতভাগ কাজ সম্পন্ন করেছেন কিন্তু কাজের মান যাচাইকালে দেখা যায় ভবনের রংকরণের মান সন্তোষজনক নয়।
উল্লেখ্য,প্রাক্কলনে ফ্যানের মূল্য ৩ হাজার ৩৮৬ টাকা থাকলেও তিনি অপেক্ষাকৃত কমমূল্যের গাজী ফ্যান ক্রয় করেছেন। এছাড়াও স্লিপ প্লানের সব কাজেই তিনি অনিয়ম করেন। প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়ের অধ্যয়নরত প্রতিবন্ধী এক ছাত্রের মাধ্যমে ড্রেন পরিষ্কার করিয়েছেন,যা মোটেই কাম্য নয় বলেও তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন তদন্ত কমিটি।
সম্পাদক ও প্রকাশক মোঃ শিমুল পারভেজ, সহকারী সম্পাদকঃ মোঃ মোমিন ইসলাম,
নির্বাহী সম্পাদকঃ মোঃ রিপন আলী, বার্তা সম্পাদকঃ মোসাঃ তাসলিমা খাতুন (সালমা)
সহকারী বার্তা সম্পাদকঃ মোঃ শাহীনুর রহমান শাহীন
🔴জিমেইলঃ [email protected]
☎️ মোবাইলঃ ০১৭৮০-০০৩৬৭ ৮
♦️সারাদেশে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে ♦️
All rights reserved © 2024 dailysadhinbangladesh24