মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি –
মুন্সীগঞ্জের শহরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ছাত্র হত্যা ৫ মামলায় আসামি করা কে কোথায় আওয়ামীলীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ধরাছোঁয়ার বাইরে আত্মগোপনে।
এ নিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঘিরে হতাহতের ঘটনায় মুন্সীগঞ্জ সদর থানায় তিনটি হত্যা, দুটি হত্যাচেষ্টাসহ পাঁচটি মামলা হয়েছে।
২০২৪ গত ৪ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দক্ষিন উত্তর ইসলামপুরের বিএনপির নেতা-কর্মীরা অংশ নেন। সকাল পৌনে ১০টার দিকে ছাত্র-জনতা শহরের সুপারমার্কেট মিরকাদিম পৌরসভার আওয়ামী সভাপতি সাবেক মেয়র শহিদুল ইসলাম শাহিনের নির্দেশে কিশোর গ্যাংরা শিক্ষার্থীদের উপর হামলার জন্য অস্ত্র-ককটেল নিয়ে শহরে প্রবেশ করেন ২-৩ হাজার দলীয় নেতাকর্মী ও অনুসারীরা এলাকায় গেলে পুলিশের উপস্থিতিতে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা শিক্ষার্থীদের পেটাতে শুরু করেন। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা শহরের হাটলক্ষ্মীগঞ্জ এলাকার সড়ক দিয়ে সুপারমার্কেট এলাকায় আসতে চাইলে জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ফয়সাল মৃধা, শহর ছাত্রলীগের সভাপতি নসিবুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ সাগরের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা হামলা চালান। অন্যদিকে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাসের শেল ও ছররা গুলি ছোড়ে পুলিশ। গুলিতে উত্তর ইসলামপুরের রিয়াজুল ফরাজী, সজল মোল্লা ও নুর মোহাম্মদ মারা যান। এতে দেড় শতাধিক আন্দোলনকারী গুলিবিদ্ধ হন । এ দিন মঞ্জিল মোল্লার পেটে, পিঠে ও হাতে তিনটি গুলি লাগে। ঘটনার পর থেকে আড়াই মাস হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন মঞ্জিল। এখনো তাঁর চিকিৎসা চলছে।বাদী মঞ্জিল মোল্লা মুন্সিগঞ্জ শহরের উত্তর ইসলামপুর এলাকার ইব্রাহীম মোল্লার ছেলে। তিনি পেশায় দিনমজুর ও বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।
মামলার এজাহার নথিভুক্ত আসামি করা উল্লেখ্য, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ মুন্সীগঞ্জ জেলা আওয়ামী সভাপতি আলহাজ্ব মহিউদ্দিন আহমেদের দ্বিতীয় স্ত্রী সোহানা তাহমিনা, মুন্সিগঞ্জ-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মহিউদ্দিন আহমেদের ছেলে কেন্দ্রীয় যুবলীগের সদস্য আনিসুর রহমান ওরফে রিয়াদ, মুন্সীগঞ্জ -২ আসনের সাগুফতা ইয়াসমিন এমিলি, মুন্সিগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ লুৎফর রহমান, মুন্সীগঞ্জ-৩ আসনের ফয়সাল বিপ্লব,সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আনিস উজ্জামান, মুন্সিগঞ্জ শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল মতিন, সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান ভূঁইয়া, চরকেওয়ার ইউনিয়ন আফসার উদ্দিন ভূঁইয়া আফসু, সদর উপজেলার সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান নাজমুল হাসান সোহেল, গজারিয়ায় উপজেলা চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম, শিলই ইউনিয়ন চেয়ারম্যান পারভেজ মৃধা, পঞ্চসার ইউনিয়ন চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফা, রামপাল ইউনিয়ন চেয়ারম্যান বাচ্চু শেখ, মিরকাদিম পৌরসভার আওয়ামী লীগের সভাপতি সাবেক মেয়র শহিদুল ইসলাম শাহিন, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক কামাল উদ্দীন আহমেদ, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ফয়সাল মৃধা, সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. সুরুজ, শহর ছাত্রলীগের সভাপতি নসিবুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাত হোসেন, বেলায়েত হোসেন লিটন মাঝি চেয়ারম্যান টঙ্গীবাড়ি, ইঞ্জিনিয়ার ওয়াহিদ কাজি সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান টঙ্গীবাড়ি, নাহিদ খান সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান টঙ্গীবাড়ি, গজারিয়ায় উপজেলা চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম, ফয়েজ আহমেদ পাভেল জেলা ছাত্রলীগ সেক্রেটারিসহ আরও নেতাকর্মীরা চলে গেছেন আত্মগোপনে গডফাদাররা।
মুন্সীগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার শামসুল আলম সরকার বলেন, ‘তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে আসামিদের গ্রেপ্তারের সার্বক্ষণিক অভিযান চলছে।’