

শাহীনুর রহমান, মানিকগঞ্জ প্রতিনিধিঃ
নব্বই দশকে এদেশে বাংলা মুভি দেখত না এমন মানুষ খুব কম আছে।বিশেষ করে গ্রামের মানুষ সাপ্তাহিক ( শুক্রবার, শনিবার) বাংলা মুভি দেখার জন্য অধীর আগ্রহ নিয়ে থাকত।এর বাইরেও সিডি ভিসিডি ভাড়া নেওয়ার প্রচলন ছিল।তখন বিনোদনের আরেক মাধ্যম ছিল রেডিও।নব্বই দশকের চলচ্চিত্র জগতের সমস্ত খবর রাখতেন তিনি।কবে কোন মুভি মুক্তি পাচ্ছে, ইদে কয়টা মুক্তি পাবে, কোন মুভির পরিচালক কে, কোন পরিচালক কতগুলো মুভি করেছেন,কোন নায়ক নায়িকা বা খল অভিনেতা কতগুলো ছবি করেছেন, কোন গানের কোন শিল্পী একটু শুনেই বলে দিতে পারত।বলছি মানিকগঞ্জের শিবালয় থানার নয়াকান্দী গ্রামের সিরাজুল ইসলামের কথা। ছাত্র জীবন থেকেই তিনি বাংলা সিনেমা সহ বিদেশি চলচ্চিত্রের ও খবরাখবর রাখতেন।
বাংলা চলচ্চিত্রের প্রতি ভালবাসা থেকেই তিনি এসব তথ্য আত্মস্থ করতেন।তবে চলচ্চিত্র যখন অতিমাত্রায় ডিজিটাল করা হল এবং নব্বই দশকের গুণী অভিনেতা কণ্ঠশিল্পী নায়ক রাজ রাজ্জাক,হুমায়ুন ফরিদী,রাজীব,মান্না,দিলদার,এটিএম শামসুজ্জামান, খালিদ হাসান মিলু, এন্ড্রু কিশোর, সুবির নন্দী এধরনের প্রিয় লোক মারা যাবার পর খবর রাখার আগ্রহ নেই বললেই চলে।
বর্তমান চলচ্চিত্র নিয়ে আক্ষেপ করেন তিনি।সিরাজুল বলেন,
এ দেশে অনেক গুণী শিল্পীকে কাজে লাগানো হচ্ছে না।
বলিউডে সিনিয়র শিল্পীদের নিয়ে একের পর এক হিট ছবি নির্মিত হচ্ছে। অনিল কাপুর, অক্ষয় কুমার, অজয় দেবগণদের কেন্দ্র করে গল্প লিখে প্রজন্মের পর প্রজন্মকে মুগ্ধ করে চলেছে বলিউড। কিন্তু বাংলাদেশের নব্বই দশকের জনপ্রিয় নায়ক বাপ্পারাজ, আমিন খান, ওমর সানী, অমিত হাসানরা আজ প্রায় অনিয়মিত হয়ে পড়েছেন।
এ বিষয়টি নিয়ে আক্ষেপ প্রকাশ করেছেন সিরাজুল ইসলাম। মুম্বাইতে সিনিয়রদের নিয়ে গল্প তৈরি হয়, কিন্তু আমাদের দেশে তা হচ্ছে না। নতুনদের নিয়ে সিঙ্গেল ট্র্যাকের ছবি হচ্ছে। তারা স্ক্রিনে প্রতিযোগিতায় যেতে চায় না। অথচ নব্বই এ একই ছবিতে দুই-তিনজন নায়ক একসঙ্গে কাজ করত।
তিনি আরও বলেন, “এখন পারিবারিক গল্প বা সেন্টিমেন্ট নিয়ে খুব কম কাজ হয়। অথচ আগে শাবানা ম্যাডাম, জসীম, আলমগীর, রাজ্জাক, ববিতা ম্যাডামের সঙ্গে স্ক্রিন শেয়ার করে তাদের দর্শকদের কাছেও পৌঁছুতে পারত কোন কোন অভিনেতা। তাই বাপ্পারাজ, আমিন খান, ওমর সানী,অমিত হাসান, শাবনূর, মৌসুমী, পপিসহ এই প্রজন্মের শিল্পীদের সঠিকভাবে কাজে লাগানো দরকার।
নব্বই দশকের জনপ্রিয় শিল্পী ও বর্তমান প্রজন্মের তারকাদের একসঙ্গে নিয়ে ভিন্নধর্মী গল্পের সিনেমা নির্মাণ করা হলে দর্শক আবার হলমুখী হবে। তিনি বলেন, “চারটা গান, কয়েকটা ফাইট, আর গল্পের শেষে প্রতিশোধের ফর্মুলা থেকে বের হয়ে আসতে হবে। নতুন ধরনের গল্প দরকার।